শ্রীঃ সঞ্জয় কুমার শর্মা (২১), পিতাঃ শ্রী জদুনাথ শর্মা, মাতাঃ দিপীকা রানী শর্মা, ঠিকানাঃ মোমিনপুর ২ নং ওয়ার্ড ইউনিয়ন জোংড়া, উপজেলাঃ পাটগ্রাম, জেলাঃ লালমনিরহাট। অত্যন্ত মেধাবী একটি ছেলে। অভাবের সংসারে ছোট বেলা থেকেই জন্মসূত্রে শর্মা পরিবারের এ ছেলেটি বাবার অবর্তমানে পরিবারের খরচ চালাতে গিয়ে তাকে অন্যের সেলুনের দোকানে কাজ শুরু করতে হয়। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালেই মানুষের দোকানে কম্পিউটারের কাজের হাতেখড়ি হয় তার। কিন্তু এতকিছু করার পরেও দিন শেষে লেখাপড়ার কাজটা ঠিকই সে চালিয়ে যায়। এর মধ্যে সে জেএসসি পাশ করে। পড়াশোনার পাশাপাশি মানুষের দোকানে কাজ করাও অব্যাহত থাকে। সেই সাথে সে একে একে বিদ্যুৎ এবং ডিস এন্টিনার কাজও ভালোভাবে শিখে ফেলে এবং এসব কাজ করে সে আয় বাড়াতে থাকে। পিইসি, জেএসসির পর এরই মধ্যে এস,এস,সিও কৃতিত্বের সাথে পাস করে সঞ্জয় শর্মা।
সেলুনের কাজটিকে মূল পেশা হিসেবে রেখে বর্তমানে সে কম্পিউটারের অপারেশনাল সকল কাজ, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার রিলেটেড যেকোনো সমস্যা সমাধান করা, বিদ্যুৎ ও ডিস এন্টিনার সংযোগ দেয়া ও যেকোনো সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করেছে সে। তার কাছে প্রতিটি সময়ই মূল্যবান। সময়ের চেয়ে এগিয়ে চলা এ ছেলেটি এই বয়সেই একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। একসময় অন্যের দোকানে কাজ করা ছোট্ট সঞ্জয় এখন তার নিজের সেলুন দোকানে কর্মচারী রেখেছে ০২(দুই) জন। এছাড়া তার কম্পিউটার সার্ভিসিং এর দোকান এবং ইলেকট্রনিক্স এর দোকান রয়েছে।
মানুষের জন্য কাজ করার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সে ইতোমধ্যেই নিজের কম্পিউটারের দোকানের ছোট্ট পরিসরে এলাকার অনেককে বিনা খরচে কম্পিউটারের বেসিক ট্রেইনিং দিয়েছে। ছোট্ট বয়সেই পরিবারের হাল ধরা সঞ্জয় নিজ এলাকার বাইরে পাশ্ববর্তী উপজেলাতেও তার কাজের জন্য সুপরিচিত এবং একজন সৎ ছেলে হিসেবে স্বীকৃত। ২০২০ সালের আসন্ন এইচ,এস,সি পরীক্ষায় একজন পরীক্ষার্থী সঞ্জয় পাটগ্রাম উপজেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর একজন অনুসরণীয় ও সক্রিয় সদস্য। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়, পাটগ্রাম, লালমনিরহাট হতে সে ২০১৯-২০ অর্থবছরের কোটায় বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ০৩ (তিন) দিনের সফ্ট স্কিলস্ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
দিনমজুর থেকে উদ্যোক্তা
বোটন রবিদাস। পিতা: ভিখারী রবিদাস, মাতা: লালমুখী রবিদাস। বর্তমান ঠিকানা: গ্রাম: উত্তর ঘণেশ্যাম, ডাক: তুষভান্ডার, উপজেলা: কালীগঞ্জ, জেলা: লালমনিরহাট। তিন ভাই ও চার বোন, পিতা মাতাসহ মোট ৬ জনের অতিকষ্টের সংসার ছিলো বোটন রবিদাসের। লেখাপড়া করেছে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটতো বোটনদের। তাই ছোটবেলাতেই বাবার মাধ্যমেই জুতা শেলাইয়ের কাজে হাতে খড়ি হয় বোটন বরিদাসের। প্রথমে স্থানীয় বাজারেই ব্যবসা শুরু করেন। জুতা শেলাই,জুতা কালি করে দৈনিক ১০০-২০০ টাকা আয় হতো; যা চাহিদার তুলনায় অতি সামান্য। বিভিন্ন ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কাছ থেকে অভাবে বাধ্য হয়েই ঋণ গ্রহণ করেন বোটন রবিদাস। দিন দিন ঋণের পরিমান বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক পর্যায়ে বেশি আয়ের আশায় পাড়ি জমান ঢাকার উদ্দেশ্যে। দীর্ঘদিন কষ্ট করার পর একজন জুতা প্রস্তুতকারীর কাছ থেকে জুতা তৈরি করতে শিখেন এবং সেখানেই দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে থাকেন। এমন সময় তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ হতে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন “ বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতাধীন ৩ দিনব্যাপী সফ্ট স্কিলস প্রশিক্ষণ ” সম্পর্কে জানতে পারেন।